প্রকাশনার ১৬ বছর

রেজি নং: চ/৫৭৫

১৪ই নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
২৯শে কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
২৩শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি

ভারতে বসে হাসিনার ভয়ঙ্কর পরিকল্পনা: বাড়িঘর পুড়িঁয়ে দেয়ার উস্কানী

editor
প্রকাশিত অক্টোবর ২৮, ২০২৪, ০৬:৫৪ পূর্বাহ্ণ
ভারতে বসে হাসিনার ভয়ঙ্কর পরিকল্পনা: বাড়িঘর পুড়িঁয়ে দেয়ার উস্কানী

Manual8 Ad Code

 

প্রজন্ম ডেস্ক:

 

ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে গেছেন শেখ হাসিনা। দেশ ছাড়ার পর একবার বিবৃতি দিয়েছেন তিনি। এরপর থেকে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানি কোনো নিদের্শনা পাওয়া যায়নি। তবে সম্প্রতি শেখ হাসিনার কণ্ঠ সদৃশ বেশ কয়েকটি ফোনালাপ ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।

নোটিজেনরা দাবি করছেন, ভারতে বসে শেখ হাসিনা দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির জন্য নেতাকর্মীদের বিভিন্ন নির্দেশনা দিচ্ছেন। সেসব ফোনালাপই ঘুরছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। এমনই একটি তিন মিনিট ১৭ সেকেন্ডের ফোনালাপ রোববার (২৭ অক্টোবর) একটি গণমাধ্যমের কাছে এসেছে।

নতুন এই ফোনালাপে শেখ হাসিনার কণ্ঠ সদৃশ একজনকে বলতে শোনা যায়, ‘ডিসেম্বর পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। তোমাদের বাড়িঘরে যারা আগুন লাগিয়ে দিয়েছে, তাদের বাড়ি ঘর নেই? সব কথা কি বলে দিতে হয়?’

ফোনকলের অন্য প্রান্তের কণ্ঠটি গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জের সাবেক ছাত্রলীগ সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান শাকিল আলম বুলবুলের দাবি করা হচ্ছে। তিনি বর্তমানে কোথায় আছেন তা জানা যায়নি।

Manual5 Ad Code

ফোনালাপে শেখ হাসিনা বলেন, ‘যারা এখন বেশি বেশি বাড়াবাড়ি করছে। বেশি ভালো থাকবেন না আপনি। দেখো ডিসেম্বর পর্যন্ত ওই শত্রুরা টেকে কি না? কাউকে পালাতেও দেওয়া হবে না। যে কয়টা নাফরমানি করছে তাদের একটাও অস্ত্র থাকবে না।’

এ সময় অন্য প্রান্ত থেকে (সাবেক ছাত্রলীগ নেতা) বলেন, ‘জ্বি নেত্রী, আলহামদুলিল্লাহ। আপনার কথায় আমরা ভরসা রাখছি।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘একদম একদম।’

 

 

তখন সাবেক ছাত্রলীগ নেতা বলেন, ‘আপনি একটু মাথা ঠান্ডা রেখে আপনার কৌশলে এগুন নেত্রী। তবে সবাইকে সব কাজ বরাদ্দ রেখে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘ঠিক আছে, আমি সবাইকে বলছি, তোমরা শুধু দুই মাস অপেক্ষা করো। কিছু বলো না।’

সাবেক ছাত্রলীগ নেতা বলেন, ‘জ্বি নেত্রী।’

Manual3 Ad Code

শেখ হাসিনা বলেন, ‘ওরা ফেল করবে, আর আমরা যদি কিছু করি, তখন বলবে আমাদের জন্য করতে পারে নাই। সেটা আর বলার মুখ নেই। জাতীয় আন্তর্জাতিকভাবেও ওই যে সুদখোর ইউনুসের গুটি গুটি চেহারার দ্বার আটকে গেছে মানুষের কাছে।’

সাবেক ছাত্রলীগ নেতা বলেন, ‘জ্বি নেত্রী অলরেডি বাংলার মানুষ বুঝে গেছে। মানুষ ভয়তেই কেউ মুখ খুলতে পারছে না।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘এখন ভয় পাওয়ার কিছু নেই, এখন ওদের ভয় দিতে হবে।’

 

সাবেক ছাত্রলীগ নেতা বলেন, ‘জ্বি নেত্রী, ওই যে আমাদের গোবিন্দগঞ্জের কালাম ভাই এমপি আর আমি উপজেলার চেয়ারম্যান বর্তমান ছিলাম নেত্রী, আর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পরপর ছিলাম দুই বার, উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলাম। ওনার বাড়ি গাড়ি সব জ্বালাই পুড়াই দিছে। আমারও বাড়ি গাড়ি সব জ্বালাই পোড়াই দিছে নেত্রী। আমাদের অসংখ্যা মামলা দিছে, আপনি শুধু আমাদের জন্য দোয়া রাখবেন।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘না আমি একটা কথা বলি, তোমাদের বাড়ি পোড়াই দিছে কে?’

সাবেক ছাত্রলীগ নেতা বলেন, ‘ওরাই নেত্রী, জামায়াত বিএনপি সকলই।’

 

শেখ হাসিনা বলেন, ‘তাদের ঘর-বাড়ি নেই?’

সাবেক ছাত্রলীগ নেতা বলেন, ‘জ্বি আছে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘তাহলে, সবকিছু কি প্রকাশ্যে করতে হয়।’

সাবেক ছাত্রলীগ নেতা বলেন, ‘জ্বি না, না নেত্রী।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘তোমাদের নাই, তাহলে কারো ঘর-বাড়ি থাকবে না।’

সাবেক ছাত্রলীগ নেতা বলেন, ‘একটা সংশয় নেত্রী, মাননীয় নেত্রী গোবিন্দগঞ্জ আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং সেক্রেটারি, তাদের নামে একটি মামলাও হয়নি। কিংবা তাদের বাড়ি-ঘরেও ওরা যায়নি। ওরা কিভাবে এটাকে?’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘শোনো ওরা দেখে যেগুলি পোটেনশিয়াল, যেগুলি দেখে একেবারেই শক্ত তাদের ওরা তালিকা করে। সবাইকে কাউন্ট করে না। সেইজন্য বললাম, যাদের বাড়িঘর পোড়া গেছে, তাদের হিসাব নেওয়া হচ্ছে, কারা পোড়াতে আসছিল, আর আমার বাড়ি যদি পোড়ে তাদেরও পুড়বে।’

Manual2 Ad Code

সাবেক ছাত্রলীগ নেতা বলেন, ‘জ্বি নেত্রী, জ্বি নেত্রী আলহামদুলিল্লাহ। আপনার সঙ্গে কথা বলে বুকটা ভরে গেলো নেত্রী। আপনি ভালো থাকবেন।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘মামলা, আমারতো শুধু গোবিন্দগঞ্জ না, আমারতো সারা বাংলাদেশে ২২৭টি মার্ডার কেস। আমি বলছি সবাই তালিকা করো। তোমরাও তালিকা করো। ২২৭ মার্ডারের লাইন্সেস পেয়ে গেছি। এক মামলায় যে শাস্তি, শোয়া দুইশো মামলায় একই শাস্তি। তাই না। ঠিক আছে সেই শাস্তি নেবো। তার আগে শোয় দুইশো হিসাব করে নেবো। এটা যেন মাথায় থাকে।’

Manual8 Ad Code

সাবেক ছাত্রলীগ নেতা বলেন, ‘ইনশাআল্লাহ, ইনশাআল্লাহ।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘এবার একবার আসতে পারলে কেউ ফেলাইতে পারবে না ইনশাআল্লাহ।’

জানা গেছে, শাকিল আলম বুলবুল ছাত্রজীবন থেকেই ছিলেন সন্ত্রাসী। হত্যা গুম খুনসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কাজে পারদর্শী হওয়ায় সাবেক এমপি আবুল কালাম আজাদ তাকে সহজেই কাছে টেনে নেন। তার কাজে সন্তুষ্ট হয়ে সাপমারা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বানান। চেয়ারম্যান থাকাকালীন তিনি ধর্মীয় কাজের নামে সরকারি বরাদ্দকৃত চাল আত্মসাতের ঘটনায় দুদকের মামলায় আসামি হন।

আবুল কালাম আজাদ, সাবেক উপজেলার চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ প্রধানের নেতৃত্বে উপজেলার আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীকে সঙ্গে নিয়ে ২০১৬ সালে গোবিন্দগঞ্জের সাঁওতাল পল্লীতে হামলা ভাঙচুর লুটপাটে তিন সাঁওতাল হত্যা করেন শাকিল আলম বুলবুল। সাঁওতাল হত্যা মামলার চার্জশিটভুক্ত ৯০ নম্বর আসামিও শাকিল আলম বুলবুল।

নাম প্রকাশ করার শর্তে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি বলেন, ফাঁস হওয়া ফোনালাপটি শাকিল আলম বুলবুলের। বুলবুলসহ সাবেক এমপি আবুল কালাম আজাদ দুইজনই ভারতে পালিয়ে গেছে। তিনি নিরাপদে থেকে নেত্রীকে উপজেলা আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়েছেন। তিনি চাচ্ছেন উপজেলায় যেসকল আসামি আছে তারাও বিপদে পড়ুক। নিজেরা ক্ষমতায় থাকার সময় হাজার হাজার কোটি টাকা কামাই করে নিরাপদ স্থানে পালিয়ে আছেন। তিনি চাচ্ছেন আওয়ামী লীগের সবাই যেন জনরোষানলে পড়ে। এসব নেতার কারণেই আজ দেশে আওয়ামীগের এমন অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে।

Sharing is caring!

Manual1 Ad Code
Manual3 Ad Code