প্রকাশনার ১৬ বছর

রেজি নং: চ/৫৭৫

১৬ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
১লা পৌষ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
২৫শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

বৃষ্টিতে বিয়ানীবাজারের সড়কগুলো হয়ে ওঠে জলমগ্ন খাল

editor
প্রকাশিত আগস্ট ৩, ২০২৫, ১১:৫২ পূর্বাহ্ণ
বৃষ্টিতে বিয়ানীবাজারের সড়কগুলো হয়ে ওঠে জলমগ্ন খাল

Manual4 Ad Code

 

মিলাদ জয়নুল:

 

বিয়ানীবাজার উপজেলার সংযোগ সড়কগুলো বৃষ্টিতে হয়ে ওঠে জলমগ্ন খাল! এখানকার সড়কজুড়ে খানাখন্দ আর কাদা-পানি। কোনো কোনো অংশে সড়কের চিহ্নই খুঁজে পাওয়া কঠিন। দীর্ঘদিন ধরে সংস্কারকাজ বন্ধ থাকায় উপজেলার গ্রামীণ সড়ক দিয়ে প্রতিদিন দুর্ভোগের মধ্যে চলাচল করছেন লাখো মানুষ।

Manual6 Ad Code

সরেজমিনে দেখা গেছে, সড়কজুড়ে বড় বড় গর্ত, যা বৃষ্টির পানিতে ভরে গেছে। কোথাও হাঁটুসমান পানি, আবার কোথাও কাদার আস্তরণ। যান চলাচল দুষ্কর হয়ে পড়েছে। এসব সড়ক দিয়ে এখন হেঁটে চলাও দুঃসাধ্য।

Manual7 Ad Code

সময়মতো কাজের দরপত্র আহ্বান না করা, দরপত্রে জিনিসের দাম এক, আর বাজারে আরেক, সময়মতো বরাদ্দ না আসা ও ঠিকাদারের অবহেলার কারণে পড়ে আছে বিয়ানীবাজারের বেশির ভাগ গ্রামীণ রাস্তার উন্নয়নকাজ। আর এতে করে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে এলাকাবাসীর। বিশেষ করে স্কুলপড়ুয়া ছাত্রছাত্রী, রোগী ও বয়স্ক ব্যক্তিরা বিপাকে পড়েছেন বেশি।

উপজেলার প্রায় সবক’টি গ্রামীণ রাস্তার অবস্থা শোচনীয়। পৌর এলাকার রাস্তাগুলোর অবস্থা আরও খারাপ। কবে এখানকার ভাঙাচোরা রাস্তাগুলো সংস্কার হবে, তা কারো জানা নেই। বিয়ানীবাজার এলজিইডি অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলায় কাঁচা-পাকা মিলে সর্বমোট রাস্তার পরিমাণ ৬২৭ কিলোমিটার। এর মধ্যে ২১০ কিলোমিটার রাস্তা রয়েছে পাকা। দীর্ঘদিন থেকে সংস্কারকাজ না হওয়ায় পাকা রাস্তাগুলো খানাখন্দে ভরে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে বর্ষা মৌসুমে এসব গর্ত ও ভাঙাচোরা রাস্তা দিয়ে যাতায়াত অনেকটা কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে স্থানীয় বাসিন্দাদের। এ ছাড়া উপজেলার বেশির ভাগ কাঁচা রাস্তাগুলো গ্রামীণ জনপদের মানুষের দুর্ভোগের প্রধান কারণ।

Manual3 Ad Code

সূত্র জানায়, ২০২২ সালের ভয়াবহ বন্যায় উপজেলার ৪০ কিলোমিটার রাস্তার মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আর এসব রাস্তার তালিকা পাঠানো হলেও এখনো পর্যন্ত বরাদ্দ আসেনি। ফলে বেশির ভাগ রাস্তা বন্যা-পরবর্তী চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ায় এলাকাবাসী নিজ উদ্যোগে মেরামত করে চলাচলের উপযোগী করে নেন। বিয়ানীবাজার পৌরশহরের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনের জন্য উপজেলার গ্রামীণ রাস্তাগুলোর সবই খানাখন্দে ভরা। কসবা ত্রিমুখি বাজার রাস্তা, বড়দেশ ঘুঙ্গাদিয়া রাস্তা, নবাং রাস্তা, মুল্লাপুর-গোডাউন বাজার-কালীবাড়ী বাজার রাস্তা, বৈরাগী বাজার ত্রিমুখী থেকে ফাঁড়ির বাজার রাস্তা, শেওলা পল্লী বিদ্যুৎ রাস্তা, শারোপার বাজার রাস্তা, দেউলগ্রাম-চারখাই রাস্তা, মাথিউরা-ঈদগাহ রাস্তা, পীরেরচক-বিবিরাই বাজার রাস্তা, মাটিজুরা রাস্তা, নয়াদুবাগ রাস্তাসহ সবগুলো গ্রামীণ সড়কের অবস্থা ভয়াবহ। এসব সড়ক দিয়ে রিকশা, টমটম, সিএনজি অটোরিকশা নিয়ে সাধারণত কোনো চালক যেতে চায় না। আর ভাঙা সড়কের দোহাই দিয়ে অনেক দুষ্টু চালক অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছেন। কুড়ারবাজার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তুতিউর রহমান জানান, সাধারণ মানুষের দাবী রাস্তা সংস্কার। কিন্তু বরাদ্দ নেই, সংস্কার হবে কিভাবে?

Manual2 Ad Code

সিলেট-৬ বিয়ানীবাজার-গোলাপগঞ্জ নির্বাচনী আসনে জামায়াতে ইসলামী সমর্থিত প্রার্থী মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন স্থানীয় রাস্তাঘাটের বেহাল দশা অবস্থা বর্ণআ করে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, এই জনপদের সড়ক উন্নয়নে যথাযথ কর্তৃপক্ষের সাথে দফায়-দফায় যোগাযোগ করছি। আশাকরি অচিরেই সুফল পাওয়া যাবে।

বিয়ানীবাজারের কলেজছাত্র সাইফুল ইসলাম রাফি বলেন, ‘গ্রামীণ সড়কের এ অবস্থার কারণে এখন নিয়মিত স্কুল-কলেজে যাওয়া হয় না। প্রায় সময় দেখা যায় টমটম (ইজিবাইক), অটোরিকশা উল্টে যায়। এমন কোনো দিন নেই, সড়কে ৪/৫টি দুর্ঘটনা ঘটে না।’ নবাং গ্রামের রুহুল আমিন নামের একজন বলেন, ‘প্রতিদিন ভাঙ্গা রাস্তা দিয়ে হাজার হাজার মানুষ চলাফেরা করেন। গাড়ি দিয়ে যাওয়া তো দূরের কথা, হেঁটে যেতেই কষ্ট হয়। চারপাশে শুধু কাদা আর পানি। এ অবস্থা আজকে কয়েক বছর ধরে। এর মধ্যে কয়েক মাস আগে কিছু কাজ করে ঠিকাদার ফেলে রেখে গেছে। এখন সড়কটি আরও ভয়ংকর হয়ে উঠেছে।’

বিয়ানীবাজার উপজেলা প্রকৌশলী দিপক কুমার দাস বলেন, রাস্তার উন্নয়নকাজ চলমান প্রক্রিয়া। ক্রমান্বয়ে সবগুলো রাস্তাই সংস্কার করা হবে।

বিয়ানীবাজার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) গোলাম মুস্তাফা মুন্না বলেন, উপজেলার বিভিন্ন সভায় রাস্তার উন্নয়ন নিয়ে কথা হয়। সে অনুযায়ী তালিকা করে পাঠানো হয়েছে। বরাদ্দ এলে কাজ শুরু হবে।

Sharing is caring!

Manual1 Ad Code
Manual3 Ad Code