প্রকাশনার ১৬ বছর

রেজি নং: চ/৫৭৫

১৭ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
২রা পৌষ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
২৬শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

সিলেট-বিয়ানীবাজার মহাসড়ক চারলেন উন্নয়ন প্রকল্প বাধাগ্রস্থ, ক্ষুব্দ চার উপজেলার মানুষ

editor
প্রকাশিত আগস্ট ১০, ২০২৫, ০৭:৫৫ পূর্বাহ্ণ
সিলেট-বিয়ানীবাজার মহাসড়ক চারলেন উন্নয়ন প্রকল্প বাধাগ্রস্থ, ক্ষুব্দ চার উপজেলার মানুষ

Manual8 Ad Code

ছবিতে প্রস্তাবিত সড়কের নকঁশা/

 

# শেওলা বন্দর থেকে রাজস্ব আহরনে ভাটা পড়ার শঙ্কা

 

স্টাফ রিপোর্টার:

Manual4 Ad Code

সিলেট-বিয়ানীবাজার-চারখাই-শেওলা মহাসড়ক উন্নয়ন প্রকল্প’ আগামী ২০২৭ সালের ডিসেম্বরে শেষ হওয়ার কথা। কিন্তু এখনো পর্যন্ত প্রকল্পটির ১০ভাগ কাজও সম্পন্ন হয়নি। সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের উদ্যোগে গৃহিত প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ৪ হাজার ২৫৭ কোটি ৭ লাখ টাকা প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়। প্রকল্প বাস্তবায়নে ২ হাজার ৮৮৬ কোটি ৮২ লাখ টাকা ঋণ দেবে বিশ্বব্যাংক। বাকি ১ হাজার ৩৭০কোটি ২৫ লাখ টাকা সরকার কর্তৃক দেয়ার কথা।

 

জানা যায়, সিলেট সদর, দক্ষিণ সুরমা, গোলাপগঞ্জ এবং বিয়ানীবাজার উপজেলার উপর দিয়ে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য সিদ্ধান্ত নেয় একনেক। ওই বৈঠকে ৪৩ কিলোমিটার দীর্ঘ মহাসড়ককে চারলেনের আধুনিক মহাসড়কে উন্নীত করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়। সিলেট জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে প্রকল্পটির বিলম্বের প্রধান কারণ হিসেবে ভূমি অধিগ্রহণ জটিলতাকে দায়ী করা হয়েছে। তবে স্থানীয় সচেতন নাগরিকদের দাবি, জেলা প্রশাসকের সদিচ্ছা থাকলে ভূমি অধিগ্রহণের সমস্যার দ্রæত সমাধান সম্ভব।

Manual8 Ad Code

 

একটি সূত্র জানায়, গত ২৯ এপ্রিল সিলেট জেলা প্রশাসকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এক সভায় প্রকল্পটির ভূমি অধিগ্রহণ নিয়ে পর্যালোচনা করা হয়। সেখানে যুক্ত চার লেন সেতু ও অ্যাপ্রোচ সড়ক নির্মাণের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। সভার সিদ্ধান্তে বলা হয়, সীমান্তবর্তী দুই উপজেলার অল্প কিছু যাত্রী পরিবহন ছাড়া এ পথে বড় ধরনের যান চলাচল নেই। তাই আপাতত চার লেন সড়ক নির্মাণ জরুরি নয় এবং এতে সরকারি অর্থের অপচয় ঘটতে পারে। এই মতামত জেলা প্রশাসক গত ৮ মে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করেন। এমন সিদ্ধান্তের খবর ছড়িয়ে পড়লে চার উপজেলার মানুষ ক্ষুব্দ হয়ে ওঠেন। স্থানীয় বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে এ প্রকল্পের কাজ দ্রæত শেষ করতে বিভাগীয় কমিশনারের কাছে স্মারকলিপি দেয়া হয়েছে।

 

বিয়ানীবাজার জনকল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট জুবায়ের আহমেদ খান বলেন, ‘এ প্রকল্পটি যথাসময়ে বাস্তবায়ন হলে বিয়ানীবাজার, গোলাপগঞ্জ, জকিগঞ্জ ও বড়লেখার মানুষ উপকৃত হবে এবং জাতীয় অর্থনীতিও এগিয়ে যাবে। তাই মহাসড়কটির উন্নয়ন শুধু যোগাযোগ নয়, বরং অর্থনৈতিক দিক থেকেও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সরওয়ার হোসেন জানান, প্রকল্প বাস্তবায়নে কোন টালবাহানা হলে দূর্বার আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর মাওলানা ফয়জুল ইসলাম বলেন, প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে সিলেট থেকে শেওলা স্থলবন্দর পর্যন্ত যাত্রী ও পণ্যবাহী পরিবহনের যাতায়াত দ্রæত ও সহজ হবে। এছাড়া আঞ্চলিক সংযোগ সম্প্রসারণের মাধ্যমে ব্যবসা-বাণিজ্যের কার্যক্রম বাড়বে, ভূমিকা রাখবে দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে।

 

এ প্রকল্পে ২৪৭ একর ভূমি অধিগ্রহণ, প্রায় ৪৩ কিলোমিটার চার লেন সড়ক, দুটি সার্ভিস লেন, এক হাজার ৫৭৫ জন পরামর্শক সেবা, ৩১টি কালভার্ট, তিনটি সেতু, একটি ফ্লাইওভার, ছয়টি ওভারপাস, দুটি আন্ডারপাস, চারটি ফুটওভারব্রিজ, সাতটি পায়ে চলার রাস্তা ও একটি টোল প্লাজা নির্মাণের কথা রয়েছে। প্রকল্পের অতিরিক্ত পরিচালক উৎপল সামন্ত জানান, শেওলা সেতুর বর্তমান অবস্থা ঝুঁকিপূর্ণ। নতুন চার লেন সেতুটি হবে ৬০ মিটার দীর্ঘ, ২১ মিটার প্রস্থের এবং বর্ষার সময়ের সর্বোচ্চ পানির স্তর থেকে ৪০ মিটার উঁচুতে। প্রকৌশল বিশ্লেষণ ও জরিপের ভিত্তিতেই এই পরিকল্পনা করা হয়েছে।

 

তবে প্রকল্প সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা বলেন, একনেক অনুমোদনের আগে দীর্ঘ তিন বছর ধরে এই রুটে যানবাহনের পরিমাণ ও ধরন নিয়ে জরিপ হয়েছে। শেওলা স্থলবন্দর এবং এর আশপাশে শিল্প-কারখানাসহ ভারী নির্মাণসামগ্রী পরিবহনের বাস্তব চাহিদার ভিত্তিতেই চার লেন সেতুর পরিকল্পনা করা হয়েছে।

 

এদিকে সিলেট-বিয়ানীবাজার-চারখাই-শেওলা মহাসড়ক উন্নয়ন প্রকল্প’ বাধাগ্রস্থ হওয়ায় শুল্ক স্টেশন থেকে স্থলবন্দরে উন্নীত হওয়ায় শেওলা দিয়ে রাজস্ব আদায়ে ভাটা পড়ার শঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে। এতোদিন শুল্ক স্টেশন হিসেবেই ব্যবহৃত হয়ে আসছিল এটি। স্থলবন্দরটিতে অবকাঠামো ও অন্যান্য সুবিধা বৃদ্ধিতে ব্যয় হয়েছে প্রায় ১৩৮ কোটি টাকা।

 

Manual4 Ad Code

 

শেওলা স্থলবন্দর দিয়ে বর্তমানে প্রধানত গবাদিপশু, মাছের পোনা, মৌসুমী ফল, গম, রাসায়নিক সার, কাঠ, চুনাপাথর, পাথর, কয়লা, আদা, রসুন, পেঁয়াজ, কমলা, সাতকরা, চালসহ বিভিন্ন পণ্য ভারত থেকে আমদানি হয়ে থাকে। বিপরীতে রফতানি হয়ে থাকে, বিভিন্ন ধরণের খাদ্যসামগ্রী, হস্তশিল্প, তাঁতপণ্য, বেতের তৈরি পণ্য, প্লাস্টিক পণ্য, ফার্ণিচার ও মাছসহ নানা রকম পণ্য।

Manual1 Ad Code

Sharing is caring!

Manual1 Ad Code
Manual8 Ad Code