প্রকাশনার ১৫ বছর

রেজি নং: চ/৫৭৫

৯ই জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
২৫শে আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
১৪ই মহর্‌রম, ১৪৪৭ হিজরি

গবাদিপশুতে স্বয়ংসম্পূর্ণ দেশ

editor
প্রকাশিত মে ১৮, ২০২৫, ১০:১৩ পূর্বাহ্ণ
গবাদিপশুতে স্বয়ংসম্পূর্ণ দেশ

 

প্রজন্ম ডেস্ক:

দেশে গবাদিপশু উৎপাদনে এক ধরনের নীরব বিপ্লব ঘটেছে। সরকারের বাস্তবমুখী ও প্রশংসনীয় উদ্যোগ এই বিপ্লবের পেছনে কাজ করছে বলে জানা গেছে। এসব কার্যক্রমের ফলে প্রতিবছর কোরবানির ঈদে দেশের মানুষের চাহিদা মেটানোর পরও ২০ লাখের বেশি গরু ও মহিষ উদ্বৃত্ত থাকছে।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব (রুটিন দায়িত্ব) মো. তোফাজ্জেল হোসেন সংবাদমাধ্যমকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘কয়েক বছর আগেও প্রতিবেশী দেশ থেকে আমাদের গরু আমদানি করতে হতো, এখন আর সেটি লাগছে না। দেশি গরু ও মহিষের খামারিরা স্বাবলম্বী হচ্ছেন।’

মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা মাঠপর্যায়ে খামারিদের সর্বোচ্চ সহযোগিতার পাশাপাশি মনিটরিংয়ের কাজও করছেন। প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেওয়ার জন্য দল বেঁধে খামারে খামারে যাচ্ছেন। এতে গবাদিপশু উৎপাদনে নীরব বিপ্লব ঘটেছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, লক্ষ্মীপুর, ফরিদপুর, নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ, সুবর্ণচর, সিরাজগঞ্জের তাড়াশ, ঝালকাঠির রাজাপুর, নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার, রাজশাহীর তানোরসহ দেশের বিভিন্ন এলাকার জেলে ও দরিদ্র পরিবারের মধ্যে এ পর্যন্ত ৮-১০টি প্রকল্পে ১০ হাজার কোটি টাকার বেশি খরচ করেছে মন্ত্রণালয়।

মন্ত্রণালয়ের গৃহীত প্রকল্পগুলোর মধ্যে রয়েছে খামারিদের প্রশিক্ষণ, সচেতনতা বৃদ্ধি, উন্নত জাতের ঘাস উৎপাদনে বীজ সরবরাহ, টীকা ও কৃমিনাশক ওষুধ বিতরণ। এ ছাড়া গবাদিপশুর উৎপাদন খাতের চলমান সাফল্য ধরে রাখতে বিভিন্ন অংশীজনের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ, পরামর্শ ও বৈঠক করছেন মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, গবাদিপশু খাতে যে উন্নয়ন এবং উৎপাদনের বিপ্লব শুরু হয়েছে, সেসব ধরে রাখতে সরকার বেশ কিছু প্রকল্প চালু রেখেছে। ইতোমধ্যে পিপিআর রোগ নির্মূল, ঘাস উৎপাদনে গুরুত্ব প্রদান, প্রান্তিক ও মাঝারি খামারিকে প্রাণিপুষ্টি বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে।

‘প্রাণিসম্পদ ও ডেইরি উন্নয়ন’ প্রকল্পটিও বর্তমানে চলমান রয়েছে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে গবাদিপশুর উৎপাদনশীলতা অন্তত ২০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।

দুধ ও মাংস উৎপাদন বাড়াতে ‘প্রভেন বুল’ তৈরি প্রকল্পও হাতে নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। পাশাপাশি মহিষ গবেষণা ও উন্নয়ন প্রকল্পও হাতে নিয়েছে সরকার।

মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে দেশে নিবন্ধিত খামারের সংখ্যা ৬৬ হাজার এবং অনিবন্ধিত ৭০ হাজার। সব মিলিয়ে মোট খামার ১ লাখ ৩৬ হাজার। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তালিকাভুক্ত খামারির সংখ্যা ৫ লাখ ৭৭ হাজার ৪১৬ জন।

সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগের ফলে দেশে গরু-ছাগলের প্রায় দেড় লাখ খামার গড়ে উঠেছে। এ ছাড়া দেশে নিবন্ধিত ও অনিবন্ধিত মিলিয়ে দুধ উৎপাদনকারী খামারের সংখ্যা প্রায় ১২ লাখ। এই শিল্পে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত প্রায় এক কোটি মানুষ। তাদের কারণেই দেশজুড়ে গরু ও ছাগলের উৎপাদনে এক ধরনের নীরব বিপ্লব ঘটেছে।

দুগ্ধশিল্পে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের লক্ষ্যে সরকারের নেওয়া প্রকল্পগুলো বাস্তবায়িত হলে দেশের দুধ উৎপাদনে যে ঘাটতি রয়েছে, তা পূরণ হবে বলে আশা করছে প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়।

Sharing is caring!