প্রকাশনার ১৬ বছর

রেজি নং: চ/৫৭৫

৭ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
২২শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
১৬ই জমাদিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

“জাতীয় ঐক্যমত কমিশনের প্রতি খোলা চিঠি”

editor
প্রকাশিত সেপ্টেম্বর ১৭, ২০২৫, ১২:৪২ অপরাহ্ণ
“জাতীয় ঐক্যমত কমিশনের প্রতি খোলা চিঠি”

Manual3 Ad Code

এডভোকেট মোঃ আমান উদ্দিন:
গণতন্ত্রের পূর্ব শর্ত হচ্ছে নির্বাচন। রাজনৈতিক দল সমূহের মধ্যে মতবিরোধ থাকবেই। প্রতিটি দলের নিজস্ব আদর্শ কর্মসূচী আলাদা। এটা স্বাভাবিক। মত বিরোধ বা কর্মসূচী দূর করার নিয়ামক শক্তি হচ্ছে নির্বাচন। প্রতিটি দলের নিজস্ব কর্মসূচী- বা আদর্শ সাধারণ ভোটারগনের মধ্যে উপস্থাপন করা রাজনৈতিক দল সমুহের অন্যতম কাজ। জনগণের প্রতি বিশ্বাস ও ভালবাসা থাকলে স্বতঃস্ফুর্তভাবে তাহাদের নিকট লিখিত বা লিফলেট বা বক্তৃতা বিবৃতির মাধ্যমে পেশ করা। যদি টেবিল টক বা কতিপয় রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গের ঐক্যমততের ভিত্তিতে সমাধান হয়ে যেত, তাহলে গণতন্ত্র কথাটি বাদ দিয়ে আলোচনার মাধ্যমে স্বৈরতান্ত্রিক পন্থায় সরকার গঠন করে জনগনের উপর ইচ্ছামত ক্ষমতা প্রয়োগ করা যাইতে পারে। তবে শর্ত থাকবে, সাধারন জনগনের নির্বাচিত প্রতিনিধি বলা বিরত থাকতে হবে। কারণ সাধারণ জনগনকে কোন রাজনৈতিক দলই স্বতঃস্ফুর্তভাবে বিশ্বাস করে না। যদি বিশ্বাস করিত, তাহলে গনতন্ত্র প্রতিষ্টার জন্য সাধারণ পরিবারের সন্তানরাই আন্দোলন সংগ্রামে প্রাণ দিত না।
শপথ করে কোন শির্ষস্থানীয় নেতা বা নেত্রী কি বলতে পারবেন, তাহাদের কোন সন্তানাদি বা নিকটাত্মীয় আন্দোলন সংগ্রামে প্রাণ দিয়েছে? না, কোনদিন ও না। ইতিহাস বলে, আন্দোলন সংগ্রামের পর হালুয়া রুটির অংশিদার হয়েছেন মাত্র। যেমন: বর্তমান অন্তরবরর্তী সরকারে অন্তত ১০/১২ জন উপদেষ্ঠার পশ্চিমা বিশ্বে নিজস্ব বাড়ীঘর আছে। প্রাণদিল সাধারণ জনগন, ক্ষমতা গ্রহন করিলেন আন্দোলন সংগ্রামের সাথে যাহাদের কোন সংস্পর্শতা নেই।

Manual8 Ad Code

জাতীয় ঐক্যমত কমিশনের শিক্ষিত কর্তা ব্যক্তিদের বলতে চাই, প্রতিটি রাজনৈতিক দলই তাহার নিজস্ব মতামত প্রতিষ্টিত করতে চাইবে। এটা তো দোষের কিছু নহে।

যেমনঃ আদালতে হত্যাকারী এবং হত্যার শিকার উভয় পক্ষে বাদী বিবাদীগন আইনজীবি নিয়োগ করে থাকেন। উপরে বিচার পাতি এজলাসে বসেন এবং সঠিক বিচারের জন্য প্রানহীন প্রতিক নিক্তি পিছনে থাকে। এই নিক্তি দ্বারা বিচারপতি তাহার জ্ঞান বিশ্বাস মতে ন্যায় বিচারের পক্ষে রায় প্রদান করে থাকেন।
ঐক্যমত কমিশন বিচারপতি বা রেফারীর ভূমিকায় থাকবে। সাধারন ভোটারগন তাহাদের অধিকার প্রতিষ্টায় শক্তহস্তে প্রশাসনকে কাজে লাগিয়ে সাংবিধানিক অধিকার প্রয়োগে শক্ত ভূমিকা করবেন। সাধারণ ভোটারগণের অধিকার নিশ্চিত করবেন। সাধারন ভোটারগন তাহাদের মনোনীত ব্যক্তিকে নির্বাচিত করবেন। রাজনৈতিক ঐক্য হচ্ছে না. বলে আপনারা কিন্তু দায় এড়িয়ে যাওয়ার কোন সুযোগ নেই। যদি এড়িয়ে যাওয়ার কুটকেশল করেন, জাতি কিন্তু আপনাদের ক্ষমা করবে না। কিছু সংখ্যক রাজনৈতি দল প্রায় শত বছরের পুরানো। তাহাদের দাবী এক স্বৈরাচারের বিদায় হয়েছে, আরেক স্বৈরাচার ক্ষমতায় বসতে চাচ্ছে । এ কথা অগণতান্ত্রিক। যদি গণতন্ত্রে বিশ্বাসী হন, তাহলে জনগণের মতামতকে শ্রদ্ধা সম্মান করতে শিখুন । জনগন যদি শত বছরের পুরনো দলকে ভোট দিয়ে একটিবার ক্ষমতাসীন করে, তাহলে আমার বিশ্বাস সাধারন জনগন স্বাগত জানাবে। আর যদি অন্য যে কোন রাজনৈতিক দল স্বতঃস্ফুর্তভাবে ভোটে নির্বাচিত হয়, তাহলে ভোটারগন সাধুবাদ জানাবে। এটাই গনতন্ত্রের পূর্বে শর্ত।

Manual2 Ad Code

ভূল রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের কারনে গোটা জাতি ক্ষতিগ্রস্থ হয়। রাজনৈতিক দল বিলুপ্ত হওয়ার ইতিহায যথেষ্ট। যেমনঃ আওয়ামীলীগ হয়েছিল বাকশাল, বর্তমানে অপ্রসংগিক, জাতীয় পার্টি (এরশাদ) । জামাতে ইসলামী ১৯৪২ সালে প্রতিষ্টিত হলে ও সাধারণ জনগনের পাল্স বুঝতে না পেরে কখন ও ভাল ফলাফল করতে পারেনি। জনগনের পাল্স বুঝে রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত। যদি জনগনের পক্ষে থেকে রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নেন। তাহলে ভাল ফলাফল আশ করা যায়। রাজনীতি বিদদের সবসময় অথিত থেকে শিক্ষা নেওয়া। যেমনঃ জামাতে ইসলাম ১৯৮৬ সালের জাতিয় সংসদ নির্বাচনে ১০ জন, ১৯৯১ সালে ১৮ জন, ১৯৯৬ সালে ৩ জন এবং ২০০১ সালে ১৭ জন সংসদ সদস্য মোট=৪৮ জন সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। সুতরাং প্রতিটি রাজনৈতিক দল সমুহকে বলতে চাই, আত্মসমালোচনা করুন। হটকারী কোন সিদ্ধান্তই জনগনের কল্যান বয়ে আনেনি।

Manual5 Ad Code

কৌশলী হয়ে ক্ষমতা গ্রহনের চিন্তা থেকে বেরিয়ে উদার মনে গণতন্ত্র প্রতিষ্টার সংগ্রামে প্রতিটি রাজনৈতিক দলের উচিত সুষ্ট নির্বাচনের জন্য সরকার কে সহযোগীতা করা। আর এ আদর্শ প্রতিষ্ঠা হলে জুলাই ২০২৪ সালের আন্দোলনে আহত, শহীদ ও তাহাদের পরিবার শান্তি পাবে বলে বিশ্বাস করি।
লেখক, সভাপতি- সু-শাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) বিয়ানীবাজার, সিলেট। মোবাইল নং ০১৮১৯১৭৬২১৭

Sharing is caring!

Manual1 Ad Code
Manual8 Ad Code