সিলেট অফিস:
দীর্ঘ অপেক্ষা শেষে অবশেষে সিলেট-৪ আসনে দলীয় প্রার্থী হিসেবে আরিফুল হক চৌধুরীর নাম প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করেছে বিএনপি। তবে দলীয় মনোনয়ন নিশ্চিত হওয়ার পরও নির্ভার হতে পারছেন না আরিফুল হক। বরং দলের মধ্যেই চ্যালেঞ্জের মধ্যে পড়তে হচ্ছে তাকে।
শুক্রবারও আরিফুল হককে বয়কট করে গোয়াইনঘাটে মশাল মছিলি হয়েছে।
ওই মিছিল থেকে আরিফুল হককে বহিরাগত আখ্যা দিয়ে স্থানীয় কাউকে প্রার্থী দেওয়ার দাবি জানানো হয়েছে।
এসময় বক্তারা বলেন,, বিএনপি আরিফুল হক চৌধুরীকে এ আসনে মনোনয়ন দিলেও তারা চান স্থানীয় কোন নেতা ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করুন। স্থানীয় জনসাধারণের মতামতকে উপেক্ষা করে প্রার্থী দিলে এর ফলাফল ইতিবাচক হবে না। তাই আরিফুল হক চৌধুরীকে তারা বয়কট করবেন।
এক মাস ধরে নানা কানাঘুষার পর বৃহস্পতিবার দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সিলেট-৪ আসনে আরিফুল হককে প্রার্থী ঘোষণা করেন। ফলে তাঁর প্রার্থী হওয়ার জটিলতার অবসান হয়েছে।
কিন্তু সিলেট-৪ আসনে শুরু থেকে আঞ্চলিকতার প্রশ্ন তুলে আন্দোলন শুরু করে বিএনপির বড় একটি অংশ; যার নেতৃত্বে রয়েছেন গোয়াইনঘাট উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও জেলা বিএনপির উপদেষ্টা আব্দুল হাকিম চৌধুরী। তিনি দলের প্রার্থী হিসেবে দীর্ঘদিন মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন। প্রার্থিতা থেকে বাদ পড়ায় এলাকায় মশাল মিছিলসহ শোডাউন করেন। আরিফুল হক চৌধুরীকে বহিরাগত দাবি করে তাঁর সমর্থকরা মাঠে নামেন। গতকালের আগ পর্যন্ত হাকিম চৌধুরীকে নিয়ে নেতাকর্মীসহ এলাকার লোকজন স্বপ্ন দেখলেও আরিফুলকে প্রার্থী ঘোষণায় পরিস্থিতি বদলে যায়।
হাকিম চৌধুরী প্রার্থী বিষয়ে রিভিউ চেয়েছেন উল্লেখ করে বলেন, স্থানীয়দের প্রত্যাশার প্রতি সম্মান রেখে তিনি রিভিউ চান। আশা করি দল বিবেচনায় নেবে।
সীমান্তঘেঁষা সিলেট-৪ আসনটিতে গত ৬ নভেম্বর থেকে আরিফুল হক চৌধুরী আনুষ্ঠানিক প্রচারণায় নামেন। তখন বা পরে দলের পক্ষ থেকে তাঁর প্রার্থী বিষয়ে নির্দেশনা ছিল না।
তিনি দলের প্রার্থী দাবি করেই প্রচারণা শুরু করেন। সেই আসনে দলের নেতা আব্দুল হাকিম চৌধুরীকে নিয়ে বিএনপির একটি বড় অংশ তাঁর বিপক্ষে অবস্থান নেন। যারা আর নয় বিদেশি/এবার চাই দেশি কিংবা বহিরাগত প্রার্থী চাই না-বলে স্লোগান দেন। এ আওয়াজ উঠে অন্য দলের প্রার্থীদের মধ্যেও।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তৃণমূল বিএনপিসহ সাধারণ মানুষ এবার স্থানীয় প্রার্থী দেওয়ার পক্ষে ছিলেন। তারা মনে করেন স্থানীয় প্রার্থী হলে দুইভাবে ভোট পাবে। একটি স্থানীয় হিসেবে, অপরটি দলীয় হিসেবে। স্বাধীনতার পর যারা এমপি হয়েছেন হয় তারা ঢাকায় না হয় সিলেট শহরে থাকেন। স্থানীয়রা তাদের খুঁজে পান না। তৃণমূলের কর্মীদের দাবি, স্থানীয় প্রার্থী ইস্যুর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে না পারলে আরিফকে মাশুল দিতে হতে পারে।
জাতীয় নির্বাচনে আঞ্চলিকতার বিষয়টি মানতে নারাজ আরিফুল হক চৌধুরী। তিনি বলেন, স্থানীয় প্রার্থী ইস্যুর বিষয়টি নির্বাচনে কোনো চ্যালেঞ্জ হবে না। সময় হলে সবাই এক হয়ে কাজ করবে।
সিলেট-৪ আসনের ভোটারদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আপনারা কোনো ষড়যন্ত্রে পা দেবেন না। কোনো প্রকার আর্থিক অথবা বেহেশত বিষয়ে মিথ্যা প্রলোভনে পড়ে নিজের ইমান ধ্বংস করবেন না।’
Sharing is caring!