প্রকাশনার ১৬ বছর

রেজি নং: চ/৫৭৫

১০ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
২৫শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
১৯শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

বিয়ানীবাজারে অকেজো সড়কবাতি, রাতে গা-ছমছম যাত্রা

editor
প্রকাশিত নভেম্বর ১১, ২০২৪, ০৪:১৫ অপরাহ্ণ
বিয়ানীবাজারে অকেজো সড়কবাতি, রাতে গা-ছমছম যাত্রা

Manual6 Ad Code

 

Manual7 Ad Code

স্টাফ রিপোর্টার:

Manual4 Ad Code

 

কথা ছিল সূর্যের রশ্মি ও তাপ শুষে নিয়ে শক্তি সঞ্চয় করবে সোলার প্যানেল। আর সূর্য অস্ত যাওয়ামাত্র জ্বলে উঠবে সড়কবাতি। এজন্য কয়েক কোটি টাকাও ঢালা হয়। কিন্তু বেশিরভাগ সড়কবাতি আর জ্বলে না, কিছু বাতি জ্বললেও তা জ্বলে কেবল মিটমিট করে।

Manual6 Ad Code

 

Manual2 Ad Code

বিয়ানীবাজার উপজেলার সর্বত্র একই অবস্থা। বৈরাগী বাজার খেয়াঘাটে নৌকার জন্য অপেক্ষামান সাইবুল ইসলাম জানান, বাতি আছে-আলো নেই, কিছুই দেখা যায় না। রাস্তা অন্ধকার হয়ে থাকে। তিনি বলেন, ওই যে দেখছেন খাম্বাটিতে লাইট (বাতি) শোভা পাচ্ছে। কিন্তু লাইটগুলো জ্বলে না। আগে সামান্য আলো জ্বললেও এখন সেটাও আর নেই। রাতে মার্কেট বন্ধ হয়ে গেলে এই সড়কটি ‘ভূতের গলি’তে রূপ নেয়। চলাচল করতে গা ছম ছম করে।

 

নির্মাণকালে প্রতিটি বাতির ওয়ারেন্টি ধরা হয় ৬ বছর। এ সময়ে বাল্ব নষ্ট হলে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের পুনর্স্থাপন করে দেবার কথা। আর সোলার প্যানেলের ক্ষেত্রে ৫ বছর ও ব্যাটারির ৩ বছরের গ্যারান্টি থাকলেও সবই ‘‘কাজীর গরু কেতাবে আছে, গোয়ালে নেই’’ অবস্থা। কিন্তু নষ্ট বাল্ব কে যে বদলে দেবে সেরকম কাউকে খুঁজে পাচ্ছেন না এলাকার মানুষ। না ইউনিয়ন পরিষদ না, ঠিকাদার—কেউ আর সড়কবাতির খোঁজ নেয় না।

গত সরকারের সময়ে বিয়ানীবাজার উপজেলার হাট-বাজারসহ গুরুত্বপূর্ণ রাস্তার পার্শ্বে স্থাপন করা হয় সৌরবাতি (স্ট্রিট লাইট)। সন্ধ্যা নামতেই স্বয়ংক্রিয়ভাবে জ্বলে উঠতো এসব বাতি। লোডশেডিংয়ের ঝামেলা না থাকায় বাতিগুলো একটানা সারারাত আলো দিয়েছে, তবে তা হাতে গোনা কয়েকদিন।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস সূত্রে জানা গেছে, ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদফতরের গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষণ কর্মসূচি টিআর ও কাবিটার আওতায় উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজার, মসজিদ-মন্দিরের প্রবেশমুখ, খেয়াঘাট ও নির্জন অন্ধকার সড়কে সৌরবিদ্যুতের বাতি (স্ট্রিট লাইট) স্থাপন করা হয়। তবে প্রথম থেকেই এ প্রকল্পের কাজে দূর্নীতি-অনিয়মের অভিযোগ ওঠে। স্থানীয় এমপির ব্যক্তিগত সহকারি দেওয়ান মাকসুদুল ইসলাম আউয়ালের সাথে ঠিকাদারী প্রতিষ্টান সখ্যতা গড়ে তোলে ওপেন সিক্রেট দূর্নীতিতে জড়িয়ে পড়ে। অভিযোগ আছে, লাইট প্রতি কমিশন দিয়ে মনের মত কাজ করেছে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্টান। প্রতিটি খাম্বায় লাখ টাকার বেশি ব্যয় হয়েছে। তবু সেই সোলার প্যানেলেও আর স্বস্তি মিলছে না। সেবার মান এতোই শোচনীয় যে, আলোর বদলে সড়কজুড়ে আধো আলো আর আধো অন্ধকার বিরাজ করে রাতে। শুষ্ক মৌসুমে সোলার প্যানেল কিছুটা আলো ছড়ালেও বর্ষাকালে তা আর কোনো কাজেই লাগে না। আলোর বদলে তখন অন্ধকারেরই রাজত্ব। প্রতিটি সোলার প্যানেলে সূর্য থেকে কমপক্ষে ৩ দিন চলার মতো শক্তি সংরক্ষণ করে রাখার কথা। কিন্তু বর্ষায় কয়েক দিন একাধারে বৃষ্টি থাকলে বাতিগুলো একেবারেই জ্বলে না।

লাউতার অন্ধকারাচ্ছন্ন রোডে কথা হয় সোহেল নামের এক যুবকের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘রাস্তার মাঝে অন্ধকার থাকায় এসব জায়গায় বসে অনেকে নেশা করে। এতে আমাদের চলাফেরা করতে ভয় হয়। বিশেষ করে সন্ধ্যার পর এই রাস্তা দিয়ে নারীরা চলাচল করতে চান না।’ স্থানীয়দের অভিযোগ, বাতিগুলো না জ্বলায় ইউনিয়ন এবং উপজেলার কর্মকর্তাদের বারবার জানানো হলেও কোনো কাজ হয়নি।

রাস্তা অন্ধকার থাকার প্রসঙ্গে বিয়ানীবাজার উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মো: আতাউর রহমান খান বলেন, সোডিয়াম বাল্বগুলো ছিলো ৯৫ ওয়াটের। আর সোলার প্যানেলের বাল্ব লাগানো হয়েছে ৭৫ ওয়াটের। সে কারণে আলোর স্বল্পতা রয়েছে। ভবিষ্যতে রাস্তায় সোলার প্যানেল বসানোর সময় এসব ত্রুটি শুধরে নেওয়া হবে। সোলার প্যানেল স্থাপন কিছুটা সফল কিছুটা ব্যর্থ বলেও দাবি করেন এই কর্মকর্তা।

Sharing is caring!

Manual1 Ad Code
Manual8 Ad Code