প্রকাশনার ১৬ বছর

রেজি নং: চ/৫৭৫

১০ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
২৫শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
১৯শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

স্থানীয় নির্বাচনে সরকারি চাকরিজীবীদের প্রার্থী হওয়ার পক্ষে কমিশন, কিন্তু কেন?

editor
প্রকাশিত জানুয়ারি ৯, ২০২৫, ০৭:৩৬ পূর্বাহ্ণ
স্থানীয় নির্বাচনে সরকারি চাকরিজীবীদের প্রার্থী হওয়ার পক্ষে কমিশন, কিন্তু কেন?

Manual5 Ad Code

অনলাইন ডেস্ক:
বাংলাদেশের প্রচলিত নির্বাচনি আইনে স্থানীয় সরকার কিংবা জাতীয় নির্বাচনে সরকারি চাকরিতে থেকে নির্বাচনে প্রার্থিতা করার কোনো সুযোগ নেই। তবে বর্তমান স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশন যেসব সুপারিশ করার কথা ভাবছে সেখানে সরকারি চাকরিজীবীরাও নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার সুযোগ পেতে পারেন।

কারণ হিসেবে সংস্কার কমিশন বলছেন- বর্তমানে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানে যারা নির্বাচিত হন তাদের অনেকেই শিক্ষাগত যোগ্যতার দিক থেকে পিছিয়ে থাকে।

Manual3 Ad Code

তাছাড়াও অনেকে জনপ্রতিনিধি বিষয়টিকে পেশা হিসেবে বেছে নেয়। এতে করে সেবার মান যেমন কমে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোতে, তেমনি অনেকেই জড়িয়ে পড়েন দুর্নীতিতে।

বিবিসিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে স্থানীয় সরকার কমিশনের প্রধান অধ্যাপক তোফায়েল আহমেদ বলেন, প্রার্থী হওয়ার ক্ষেত্রে বার (প্রতিবন্ধকতা) উঠিয়ে দেওয়া হবে। সরকারি ও বেসরকারি চাকরিজীবী সবার ক্ষেত্রে বার উঠিয়ে দেওয়া হবে। সবাই নির্বাচন করতে পারবে।

তিনি মনে করেন, এতে শিক্ষিত ও ভালো কাউন্সিলর পাওয়ার সুযোগ পাবে স্থানীয় সরকারের প্রতিষ্ঠানগুলো।

এছাড়াও সংসদ সদস্যরা যাতে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান নিয়ন্ত্রণ করতে না পারে সে ব্যবস্থা করা, স্থানীয় সরকারে সংরক্ষিত নারী সদস্যদের ক্ষমতা বাড়ানো, বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হওয়ার বিধান বাদ দেওয়াসহ বেশ কিছু সুপারিশ নিয়ে কাজ করার কথাও জানিয়েছে সংস্কার কমিশন।

Manual8 Ad Code

নির্বাচন পদ্ধতি বদলের ইঙ্গিত

বর্তমানে স্থানীয় সরকার নির্বাচনের যে আইন রয়েছে, সেখানে শুধুমাত্র জেলা পরিষদ বাদে বাকি সব প্রতিষ্ঠানের জনপ্রতিনিধিরা ওই এলাকার ভোটারদের সরাসরি ভোটে নির্বাচিত হয়ে থাকেন।

গত মাস থেকে স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশন কাজ শুরুর পর সারা দেশের বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে অনেকের মতামত নিয়েছে।

কমিশন বলছে, তৃণমূল থেকে নির্বাচন পদ্ধতি ঢেলে সাজাতে যে সব পরামর্শ এসেছে, সেখানে কেউ কেউ প্রস্তাব করেছে যে সরাসরি চেয়ারম্যান বা মেয়র পদে কোন ভোট না করার। এক্ষেত্রে ওয়ার্ড-ভিত্তিক কাউন্সিলর কিংবা মেম্বার নির্বাচিত হওয়ার পর তাদের ভোটেই ওই পরিষদ সদস্যদের ভোটে নির্বাচিত হবে মেয়র কিংবা চেয়ারম্যান।

অধ্যাপক তোফায়েল আহমেদ বলেন, আগের মতো মেয়র নির্বাচন হবে না। আগে কাউন্সিলর মধ্যে ভোট হবে। সবাইকে কাউন্সিলর হতে হবে। সেখান থেকে একজন মেয়র হবে।

Manual7 Ad Code

এমন সুপারিশের পেছনে যুক্তি তুলে ধরে অধ্যাপক আহমেদ বলেন, এতে করে যেমন একক কর্তৃত্ব বা ক্ষমতা দেখানোর সুযোগ কমবে। তেমনি চাইলে যে কাউকে বরখাস্ত করতে পারবে না স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। তখন নির্বাচিত চেয়ারম্যান অথবা মেয়ররা অপসারণ হবে পরিষদ সদস্যদের ভোটে।

Manual6 Ad Code

তবে এই পদ্ধতি কার্যকরে একই দিনে স্থানীয় সরকারের সবগুলো প্রতিষ্ঠানে ভোট করার সুপারিশ করার ইঙ্গিতও দিয়েছে সংস্কার কমিশন।

অধ্যাপক আহমেদ বলেন, ইউনিয়ন, উপজেলা, জেলা, পৌরসভা, সিটি করপোরেশন, পৌরসভায় একই দিনে ভোট সম্ভব। আমাদের প্রস্তাবনায় এটি থাকবে।

তিনি বলেন, আমরা করণীয় ঠিক করে আইনের খসড়াও চূড়ান্ত করে দিবো। একই সঙ্গে কমিশন যে প্রস্তাবনা তৈরি করবে সেখানে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে দলীয় প্রতীক বাদ দেওয়ার বিষয়টিও থাকবে বলে জানান কমিশন প্রধান তোফায়েল আহমেদ।

স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ সালাহউদ্দিন এম আমিনুজ্জামান মনে করেন, দলীয় প্রতীকে স্থানীয় সরকার নির্বাচন হওয়ায় ভোটও যেমন প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে, সেই সঙ্গে সহিংসতাও বেড়েছে। যে কারণে দলীয় প্রতীক ছাড়া নির্বাচনের ওপর জোর দেন তিনিও।

তবে একই দিনে নির্বাচন করার চ্যালেঞ্জের কথা তুলে ধরে আমিনুজ্জামান বলেন, এটা করা চ্যালেঞ্জিং হবে। কারণ যত নিচের দিকে ভোট হয় তত বেশি সহিংসতা হয়। একই দিনে এটা ম্যানেজ করা কঠিন হতে পারে।

Sharing is caring!

Manual1 Ad Code
Manual8 Ad Code