প্রকাশনার ১৫ বছর

রেজি নং: চ/৫৭৫

৪ঠা ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
১৯শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
২রা জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

বিয়ানীবাজারের মাথিউরা মাদ্রাসায় অনিয়মের অজানা তথ্য: পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে মাত্র ২ শিক্ষার্থী

editor
প্রকাশিত নভেম্বর ৯, ২০২৪, ০৯:৫৬ পূর্বাহ্ণ
বিয়ানীবাজারের মাথিউরা মাদ্রাসায় অনিয়মের অজানা তথ্য: পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে মাত্র ২ শিক্ষার্থী

পরীক্ষায় অংশ নেয়া সেই দুই শিক্ষার্থী -ছবি আগামী প্রজন্ম

 

স্টাফ রিপোর্টার:

 

বিয়ানীবাজারের মাথিউরা সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসায় অধ্যক্ষের অনিয়ম-দূর্নীতির খবর এখন সবার জানা। তবে অজানা অনেক তথ্য নতুন করে আলোচনায় আসছে। যা নিয়ে রীতিমত তোলপাড় চলছে মাথিউরার গ্রামাঞ্চলে। উপজেলার শিক্ষা পরিবারেও চলছে নানাকথা।

 

জানা যায়, বিয়ানীবাজারের একসময়ের সাড়া জাগানো মাথিউরা সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসা এখন শিক্ষাক্ষেত্রে পিছিয়ে গেছে। শিক্ষার মান ক্রমশ: নিম্নগামী হচ্ছে। এই প্রতিষ্টানের অভ্যন্তরীণ পরীক্ষায় দেদারছে নকল সরবরাহ, বাড়ি থেকে উত্তরপত্র লিখে আনা, প্রশ্ন ফাঁসসহ নানা অনিয়মের কারণে মানসম্মত শিক্ষা ব্যবস্থা প্রদানের তালিকা থেকে এই মাদ্রাসাটি বাদ পড়ার উপক্রম। গত ৬ নভেম্বর মাদ্রাসার দাখিল নির্বাচনী পরীক্ষার গণিত বিষয়ে ২৬ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে মাত্র ২ জন অংশ নেয়। অপর শিক্ষার্থীরা অনুপস্থিত কেন জানতে চাইলে গণিত শিক্ষক শেখ আনোয়ার হোসেন জানান, নকল করতে পারবেনা বলে তারা অনুপস্থিত থেকেছে বলে শুনেছি। কারণ আমি নকল সরবরাহে কোন ধরনের সহযোগীতা করিনা। তাছাড়া গণিত শিক্ষক হিসেবে ওই দিনের পরীক্ষার হলে আমি নিজেই দায়িত্ব পালন করি।

 

এদিকে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মো: আব্দুল আলীমের ব্যাপক অনিয়ম, দূর্নীতি ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগের তদন্ত শুরু হয়েছে। আর এসব অনিয়মে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আব্দুল আলীম নিজেই জড়িত বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ। সিলেটের জেলা প্রশাসন সূত্র জানিয়েছে, অধ্যক্ষের অনিয়মের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে। দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

 

এলাকাবাসী জানান, মাথিউরা সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আব্দুল আলীম বার্ষিক আয়-ব্যয়ের হিসাব দিতে কখনো রাজি নয়। নিজের মনগড়া ম্যানেজিং কমিটি আর স্থানীয় রাজনীতিকদের ম্যানেজ করে ইচ্ছেমত আয়-ব্যয়ের মেমো জমা করতেন তিনি।

সূত্র জানায়, মাথিউরা সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসায় দাখিল পরীক্ষার কেন্দ্র ঘোষণায় অধ্যক্ষ আব্দুল আলীম প্রতিবেশী অনেক মাদ্রাসার অধ্যক্ষের সই-সিল জাল করে সুপারিশপত্র তৈরী করেন। কেন্দ্রের কেন্দ্র সচিবের দায়িত্ব পাওয়া ওই অধ্যক্ষ দাখিল পরীক্ষায় শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে জনপ্রতি উল্লেখযোগ্য হারে চাঁদা উঠালেও পরীক্ষার হলে দায়িত্বরত শিক্ষকদের তুলনামুলক কম সম্মানী প্রদান করেন। কেবল পরীক্ষা কেন্দ্রর ফি’ থেকে প্রতি বছর প্রায় লক্ষাধিক টাকা আত্মসাৎ করছেন তিনি। পরীক্ষায় চলে নকলের প্রতিযোগতা। শিক্ষকরা তাতে বাঁধা দিলে অধ্যক্ষ কর্তৃক হয়রানীর শিকার হতে হয় বলে প্রকাশ্যে মুখ খুলেছেন একজন সিনিয়র শিক্ষক।

একটি বিশেষ সূত্র জানায়, শ্রেণীকক্ষের ফ্লোর ঢালাই, বই ও ব্যাগ ক্রয়ে অনিয়ম, ওয়াশরুম মেরামতে ইচ্ছেমত ব্যয়, গভর্ণিং বডির অনুমতি ছাড়া শিক্ষক মিলনায়তন ও ছাত্রীদের কক্ষে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন, পরে প্রতিবাদের মুখে ছাত্রীদের কমনরুম থেকে ক্যামরা অপসারণ, দোলনা ও ফিল্টার স্থাপনে দূর্নীতি, আবাসিক ছাত্রদের খাবার খরচ প্রদানে অনিয়মের বিষয়টি নতুন করে আলোচিত হচ্ছে। এসব বিষয়ও তদন্তকারী কর্মকর্তা সিলেটের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা) মো: শামীম হোসাইনের নজরে আনা হয়েছে।

 

এসব বিষয়ে মাথিউরা সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আব্দুল আলীম বলেন, তদন্তকারী কর্তৃপক্ষকে সব কাগজপত্র জমা দিয়েছি। তারা তদন্ত করে দেখছেন। আশাকরি কোন অভিযোগ প্রমাণিত হবেনা।

Sharing is caring!