প্রকাশনার ১৬ বছর

রেজি নং: চ/৫৭৫

৯ই নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
২৪শে কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
১৮ই জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি

যারা চালাবেন নির্বাচনী ট্রেন

editor
প্রকাশিত নভেম্বর ২২, ২০২৪, ০৮:৫৮ পূর্বাহ্ণ
যারা চালাবেন নির্বাচনী ট্রেন

Manual3 Ad Code

 

প্রজন্ম ডেস্ক:

 

অবসরপ্রাপ্ত সচিব এএমএম নাসির উদ্দীনকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তার সঙ্গে কমিশনার হিসেবে আছেন চারজন। তারা হলেন সাবেক অতিরিক্ত সচিব আনোয়ারুল ইসলাম সরকার, সাবেক জেলা ও দায়রা জজ আবদুর রহমানেল মাসুদ, সাবেক যুগ্ম সচিব তহমিদা আহমদ ও অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ। নতুন এ নির্বাচন কমিশনের অধীনে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন সংবিধানের ১১৮(১) অনুচ্ছেদের ক্ষমতাবলে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও চার কমিশনারকে নিয়োগ দিয়েছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার মন্ত্রিপরিষদ সচিব ড. শেখ আব্দুর রশীদের স্বাক্ষরে এ-সংক্রান্ত পৃথক দুটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠন আইনে দ্বিতীয়বারের মতো নতুন এ নির্বাচন কমিশন গঠন করা হলো।

এদিকে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসনের একজন কর্মকর্তা  বলেন, নতুন প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও চার কমিশনার আগামী রবিবার দুপুর দেড়টায় প্রধান বিচারপতির কাছে শপথ নিতে পারেন। সুপ্রিম কোর্ট জাজেস লাউঞ্জে শপথ অনুষ্ঠিত হবে।

Manual5 Ad Code

এর আগে যে ১৩ জন প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং ৩১ জন নির্বাচন কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন, তাদের অধিকাংশই নাসির উদ্দীনের মতো অবসরপ্রাপ্ত আমলা। এবার নিয়ে টানা পঞ্চমবার প্রধান নির্বাচন কমিশনার পদে নিয়োগ পেলেন সাবেক সচিব, যার শুরু হয়েছিল এটিএম শামসুল হুদার মাধ্যমে। শামসুল হুদার আগের কমিশনে একজন বিচারক থাকলেও তার আগে ছিলেন আমলা।

প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় নাসির উদ্দীন সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের প্রতিশ্রুতি দেন। তিনি বলেন, গণঅভ্যুত্থানে শহীদের রক্তের সঙ্গে বেইমানি করতে পারব না।

 

২০২২ সালের জানুয়ারিতে নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠন আইন করা হয়। সে আইনে প্রথমবার ওই বছরের ২৬ ফেব্রুয়ারি কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বে নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়। তার সঙ্গে কমিশনার হিসেবে ছিলেন অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহসান হাবিব খান, অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ রাশেদা সুলতানা, অবসরপ্রাপ্ত জ্যেষ্ঠ সচিব মো. আলমগীর ও আনিছুর রহমান।

Manual4 Ad Code

 

ওই কমিশনের অধীনেই দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন হয়েছিল। বিএনপি ও সমমনাদের বর্জনের মধ্যে গত ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত সেই নির্বাচনে জিতে টানা চতুর্থবার ক্ষমতায় আসে আওয়ামী লীগ। তার প্রায় আট মাসের মাথায় গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগের দেড় দশকের শাসনের অবসান হয়।

 

রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর গত ৫ সেপ্টেম্বর একযোগে পদত্যাগ করে আউয়াল কমিশন।

 

Manual7 Ad Code

নির্বাচন কমিশন গঠন আইন অনুযায়ী, গত ২৯ অক্টোবর আপিল বিভাগের বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরীর নেতৃত্বে ছয় সদস্যের সার্চ কমিটি গঠন করা হয়। ওই কমিটি যাচাই-বাছাই করে প্রতিটি পদের জন্য দুজন করে ১০ জনের একটি তালিকা গত বুধবার রাষ্ট্রপতির দপ্তরে পাঠায়। রাষ্ট্রপতি তাদের মধ্য থেকে পাঁচ সদস্যের ওই নির্বাচন কমিশন গঠন করে দেন।

 

প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে বিএনপি যে দুজনের নাম প্রস্তাব করেছিল, তার মধ্যে এএমএম নাসির উদ্দীনের নাম ছিল। এ পদে বিএনপির দেওয়া তালিকায় আরেকটি নাম ছিল শফিকুল ইসলাম। বিএনপি চলতি মাসের শুরুতে অনুসন্ধান কমিটির কাছে এ তালিকা দিয়েছিল। বিএনপির মিত্র দলগুলোর বেশিরভাগের তালিকায়ও এ দুই নাম ছিল।

 

নতুন প্রধান নির্বাচন কমিশনার এএমএম নাসির উদ্দীন জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয় এবং স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব ছিলেন। ২০০৯ সালের জানুয়ারিতে অবসরে যান তিনি। অন্তর্র্বর্তী সরকার সম্প্রতি তাকে স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশনের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব দিয়েছিল। এবার তাকে দেওয়া হলো নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব।

নাসির উদ্দীনের বাড়ি কক্সবাজারের কুতুবদিয়ায়। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতিতে পড়াশোনা করে তিনি পেশাজীবন শুরু করেন শিক্ষক হিসেবে। পরে বিসিএস (কর) ১৯৭৯ ব্যাচে চাকরিতে যোগ দেন। পরে তিনি উপসচিব পদে প্রশাসন ক্যাডারে যুক্ত হন।

 

কমিশনারদের মধ্যে আনোয়ারুল ইসলাম সরকার বিসিএস (প্রশাসন) ১১ ব্যাচে (১৯৯৩) চাকরিতে যোগ দেন। অবসরে যান ২০২২ সালে। তার সর্বশেষ কর্মস্থল ছিল যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়। আবদুর রহমানেল মাসুদ বিসিএস (বিচার) ১৯৮২ ব্যাচে মুনসেফ হিসেবে চাকরিতে যোগ দেন। তিনি অবসরে যান ২০১৭ সালে। তার গ্রামের বাড়ি টাঙ্গাইল জেলায়। তহমিদা আহমদ বিসিএস (প্রশাসন) ১১ ব্যাচে (১৯৯৩) চাকরিতে যোগ দেন। অবসর নেন ২০১৯ সালে। ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ ১৯৮৮ সালে ১৮তম লং কোর্সে সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। তিনি ২০২৩ সালে অবসরে যান।

 

অতীতে যারা সিইসি ছিলেন : স্বাধীনতার পর ১৯৭২ থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত বিচারপতিরা ছিলেন সাংবিধানিক এ প্রতিষ্ঠানের নেতৃত্বে। এরপর নির্বাচন কমিশনে শুরু হয় সাবেক আমলাদের নেতৃত্ব। মাঝখানে ২০০৫ সালে এক বছর সাত মাস একজন বিচারপতি ছাড়া গত প্রায় তিন দশক সাবেক আমলারাই প্রধান নির্বাচন কমিশনারের দায়িত্ব পালন করে আসছেন।

 

Manual7 Ad Code

সর্বশেষ পদত্যাগ করা সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়ালের আগে যারা এই পদে ছিলেন তারা হলেন কেএম নুরুল হুদা (১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ থেকে ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২২), কাজী রকিবউদ্দীন আহমেদ (৯ ফেব্রুয়ারি ২০১২ থেকে ৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৭), এটিএম শামসুল হুদা (৫ ফেব্রুয়ারি ২০০৭ থেকে ৫ ফেব্রুয়ারি ২০১২), বিচারপতি এমএ আজিজ (২৩ মে ২০০৫ থেকে ২১ জানুয়ারি ২০০৭), এমএ সাঈদ (২৩ মে ২০০০ থেকে ২২ মে ২০০৫), মোহাম্মদ আবু হেনা (৯ এপ্রিল ১৯৯৬ থেকে ৮ মে ২০০০), বিচারপতি একেএম সাদেক (২৭ এপ্রিল ১৯৯৫ থেকে ৬ এপ্রিল ১৯৯৬), বিচারপতি আব্দুর রউফ (২৫ ডিসেম্বর ১৯৯০ থেকে ১৮ এপ্রিল ১৯৯৫), বিচারপতি সুলতান হোসেন খান (১৭ ফেব্রুয়ারি ১৯৯০ থেকে ২৪ ডিসেম্বর ১৯৯০), বিচারপতি চৌধুরী এটিএম মাসউদ (১৭ ফেব্রুয়ারি ১৯৮৫ থেকে ১৭ ফেব্রুয়ারি ১৯৯০), বিচারপতি একেএম নুরুল ইসলাম (৮ জুলাই ১৯৭৭ থেকে ১৭ ফেব্রুয়ারি ১৯৮৫), বিচারপতি মো. ইদ্রিস (৭ জুলাই ১৯৭২ থেকে ৭ জুলাই ১৯৭৭)।

Sharing is caring!

Manual1 Ad Code
Manual8 Ad Code